আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে সপ্তাহান্তে, বিশেষ করে শনিবারের মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করার একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও কোনো চূড়ান্ত চুক্তি এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্তাবিত একটি ত্রি-স্তরীয় পরিকল্পনাই মূলত এই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এই সময়ে হামাস নারী, বয়স্ক এবং অসুস্থ জিম্মিদের মুক্তি দেবে এবং এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগার থেকে কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার জনবহুল এলাকাগুলো থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার করবে।
এই নিবিড় আলোচনা এমন এক সময়ে চলছে যখন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার দ্বিতীয় বার্ষিকী মাত্রই পার হয়েছে। দুই বছর ধরে চলা এই সংঘাতে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩৭,০০০ ছাড়িয়েছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলের ব্যাপক হামলায় গাজার বেশিরভাগ এলাকা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
তবে চুক্তিতে পৌঁছানোর পথে এখনো বড় বাধা রয়ে গেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসের সামরিক সক্ষমতা পুরোপুরি নির্মূল না করা পর্যন্ত স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়া হবে না। অন্যদিকে, হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে সকল ইসরায়েলি সেনার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
গাজার বাসিন্দারা একটি যুদ্ধবিরতির আশায় থাকলেও, বারবার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় তারা সতর্ক। খান ইউনিসের একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা শান্তি চাই, রক্তপাত বন্ধ হোক। কিন্তু যতক্ষণ না আমরা কাগজে-কলমে চুক্তি দেখছি, ততক্ষণ পুরোপুরি বিশ্বাস করা কঠিন।”
একইভাবে, তেল আবিবের ‘হোস্টেজ স্কয়ারে’ জড়ো হওয়া জিম্মিদের পরিবারগুলো আশা ও উদ্বেগের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। তারা তাদের প্রিয়জনদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে চলেছে।
মধ্যস্থতাকারীরা আশাবাদী যে, উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে একটি চুক্তিতে আনা সম্ভব। তবে চূড়ান্ত ফলাফল কী হবে এবং জিম্মিরা সত্যিই শনিবারের মধ্যে ফিরতে পারবেন কিনা, তা আগামী ৪৮ ঘণ্টার আলোচনার অগ্রগতির ওপরই নির্ভর করছে।