1. : admin :
  2. mumkhande@gmail.com : Mumkhan :
  3. info@jhenaidah-protidin.com : shishir :
২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| হেমন্তকাল| বৃহস্পতিবার| দুপুর ১২:২৪|

ঝিনাইদহে মায়ের সঙ্গে ৪ বছরের শিশু জেলহাজতে : আগে থেকে আছেন বাবাও

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩
  • ৭৮৭ Time View

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: পুলিশ পাহারায় কাঠগড়া থেকে মা জেসমিন আক্তারকে হাজতের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় চার বছরের ছোট্ট মেয়ে শিশুটির কান্না থামানো যাচ্ছিলো না। দুই হাত এগিয়ে মায়ের কোলে যাওয়ার আকুতি করছিলো। সেখানে উপস্থিত ফুফু কবিতা খাতুন শিশুটিকে কোলে তুলে আইনজীবীর কক্ষে নিয়ে গেলেও সামলাতে পারেননি। শেষে মায়ের কোলেই তুলে দিয়েছেন। বর্তমানে শিশুটি মায়ের সঙ্গেই জেলহাজতে আছে। তার বাবা মিন্টু মিয়া ১৫ দিন ধরে আছেন একই জেলহাজতে। এই মা-বাবা আর মেয়ের বাড়ি ঝিনইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায়। গতকাল সোমবার শিশুটির মা জেসমিন আক্তার (২৮) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এক মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই মামলায় জেসমিনের স্বামী মিন্টু মিয়া (৪০) ১২ জুন থেকে কারাগারে আছেন। আইনজীবীর মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ঘটনার তারিখ উল্লেখ করে ১৫ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ থানায় ভাটপাড়া গ্রামের জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এই মামলায় পুলিশ তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে আসামি নায়েব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি জানিয়ে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর চলতি বছরের ৩ এপ্রিল আদালত আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে নায়েব আলী (৩৫) গত ১৭ এপ্রিল ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পূর্বের মামলার জেসমিন আক্তার ও তার স্বামী মিন্টু মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলাটিতে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। জেসমিন আক্তারের আইনজীবী খন্দকার লিয়াকত জানান, ১১ জুন কালীগঞ্জ থানা পুলিশ জেসমিন আক্তারের স্বামী মিন্টু মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গতকাল সোমবার জেসমিনকে আদালতে হাজির করে উভয় আসামির জামিন আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেছেন। জেসমিন আক্তারকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। খন্দকার লিয়াকত বলেন, আসামি দম্পত্তির দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে বয়স ছয় বছর। আর ছোট মেয়েটির বয়স ৪ বছর। ছেলেটি তার নানার বাড়িতে আছে। মেয়ে তার মায়ের সঙ্গে এসেছিলো। মাকে কারাগারে নেয়ার সময় মেয়েটি কান্নাকাটি করছিলো। তার ফুফু শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এ ছাড়া বাড়িতে এই ছোট্ট শিশুটিকে দেখভাল করার মতো কেউ নেই। এ ছাড়া শিশুটির বাবাও কারাগারে রয়েছেন। তাই আদালতে মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন আইনজীবী। আদালত এই আবেদন মঞ্জুর করে মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে জেলহাজতে রাখার অনুমতি দিয়েছেন। শিশুটির ফুফু কবিতা খাতুন বলেন, তারা তিন ভাই-বোন। মিন্টু মিয়া ছাড়াও পিন্টু মিয়া নামে তার আরেকটি ভাই আছে। পিন্টু পৃথক সংসার করেন। তাদের বাবা নজরুল ইসলাম ও মা মনোয়ারা বেগম কুষ্টিয়ার মহিষকু-ু এলাকায় থাকেন। তারা সেখানে কাজ করেন। দুই ভাইও অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করেন। মিন্টু মিয়া কৃষিশ্রমিক। তিনি জানান, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান তারা। কবিতা খাতুন বলেন, তার ভাবির করা মামলাটি খারিজের পর তার ভাই ও ভাবির নামে যে মামলা হয়েছে সেটা তাদের জানা ছিলো না। আর মামলা দায়েরের দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। গোটা বিষয়টি তার ভাই না জানার কারণে গ্রেফতার হয়েছেন। তার ভাবি স্বেচ্ছায় হাজির হয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশারত হোসেন বলেন, আসামি জেসমিন আক্তার ও তার স্বামী মিন্টু মিয়া নায়েব আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। যে কারণে তারা বিচার চেয়ে এই মামলা করেছেন। মামলায় আসামিকে জেলহাজতে দিয়েছেন আদালত। আসামির সঙ্গে অল্প বয়সের বাচ্চা থাকায় আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশুটিকেও জেলহাজতে রাখার আবেদন করেছেন। যে কারণে শিশুটি জেলহাজতে গেছে। ঝিনাইদহ আদালতের পিপি ইসমাইল হোসেন জানান, জেলহাজতে মায়ের সঙ্গেই থাকবে শিশুটি। এভাবে রাখার নিয়ম আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021