মুন্সীগঞ্জ সদরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে চরকেওয়ার ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সেখান থেকে ১৪টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম।
গুলিবিদ্ধরা হলেন— সাকিব মোল্লা (৩০), মহিউদ্দিন মোল্লা (৩৫) ও আকাশ মোল্লা (২৫)। তাদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অপর আহত সাব্বির মোল্লা (২২) বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ ঘিরে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জালাল মোল্লা গ্রুপ এবং বিএনপি নেতা দেলোয়ার গাজী গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এর জেরে উভয়পক্ষ অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
চরকেওয়ার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জালাল মোল্লা অভিযোগ করেন, “দেলোয়ার গাজীর অনুসারীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদ জানালে শুক্রবার দুপুরে তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ করে।”
অন্যদিকে অভিযোগ নাকচ করে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা দেলোয়ার গাজী বলেন, “তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের অভিযোগ পুরোপুরি রাজনৈতিক স্বার্থে প্রচার করা হচ্ছে।”
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, “গুলিবিদ্ধ তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে ওসি এম সাইফুল আলম বলেন, “দুই গ্রুপের গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণে গ্রামজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশ পৌঁছালে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১৪টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
তিনি আরও জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দাখিল করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।