চাঞ্চল্যকর দর্জি হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র (শাবল ও দা) সহ ঘাতক গ্রেফতার
পাবনা প্রতিনিধিঃ গত ইং ১৫/০৮/২০২৩ তারিখ ২১.০০ ঘটিকা হতে ১৬/০৮/২০২৩ তারিখ সকাল ০৯.০০ ঘটিকার মধ্যে হাসিনুর রহমান হাসু (৫৩)-কে তার বসত বাড়ীতে অজ্ঞাতনামা আসামীরা কৌশলে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নির্মম ভাবে হত্যা করে। একজন দর্জির এই ধরণের হত্যাকান্ডের ফলে অত্র থানা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত পূর্বক মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য পাবনা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকালে জানা যায় যে, মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) (৫৩), পিতা- মৃত সোবাহান সরদার, সাং-চৌবাড়ীয়া হারোপাড়া, থানা-ভাঙ্গুড়া, জেলা-পাবনা পেশায় একজন দর্জি ছিলেন। তার ১ম স্ত্রী মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকার কারণে পরিবারের সম্মতিতেই সামাজিক ভাবে হাসিনুর রহমান সাজেদা খাতুনকে প্রায় ০৯ বছর পূর্বে ২য় বিবাহ করেন। তার ২য় স্ত্রীর ঘরের ০৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) তার ২য় স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেন। সেই থেকে মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) তার বাড়ীতে একাই বসবাস করতে থাকেন। এদিকে ২য় স্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা চালায় তার সংসার, করার জন্য। সাজেদা খাতুন তার বোন জামাই মোঃ রিমন সরকার (২৮), পিতা- মোঃ আতিকুর সরকার, সাং- রাঙ্গালিয়া পশ্চিমপাড়া, থানা-ভাঙ্গুড়া, জেলা-পাবনা দিয়ে একটি তাবিজ মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) বাড়ীতে পুঁতে রাখার জন্য পাঠায়। রিমন সরকার গভীর রাতে উক্ত তাবিজ হাসিনুর রহমান হাসুর বাড়ীতে প্রবেশের মূল গেটের মাঝামাঝি পুঁতে রাখে। ঐ সময় হঠাৎ করে মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) তা টের পেয়ে রিমন সরকারকে কৌশলে তার রুমে ডেকে দরজা লাগিয়ে দেয় এবং রিমনকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এতে ভীত হয়ে রিমন রুম থেকে বের হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলে মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) তাকে বাধা দেয় এবং জাপটিয়ে ধরে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রিমন ঘরের দারজার পাশে রাখা লোহার শাবল দিয়ে মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) মাথায় আঘাত করলে মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) মাটিতে পড়ে গিয়ে গোংড়াতে থাকে। তখন উক্ত শাবল দিয়ে মাথার পিছনে শাবলের ধারালো অংশ দিয়ে স্বজোরে আঘাত করলে তখনও মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) হাত-পা নাড়াতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য রিমন মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) মেঝেতে পড়ে থাকা ধারালো দা দিয়ে ঘাড়ের উপরে আঘাত করে। এই হত্যাকান্ড ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সে উক্ত ঘরের পিছনে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শাবল দিয়ে সিঁদ কেটে রাখে। যাতে মানুষ ভাবে কোন চোর চুরি করতে। এসে এই ভাবে হত্যা করেছে। তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় থানা পুলিশ অতি দ্রুত ঘাতককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং ঘাতকের দেখানো মতে সেই তাবিজ ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত শাবল, দা ও রক্ত মাখা শার্ট ও লুঙ্গি। টয়লেটের ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করে।
(আসামিকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী সম্পন্ন) করেন থানা পুলিশ)
হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মামলার আলামত সমূহ উদ্ধার :
১। একটি লোহার শাবল, যা লম্বা অনুমান-৩৩ ইঞ্চি,
২। একটি ধারালো দা, যা দৈর্ঘ্য ১৪ ইঞ্চি,
৩। মৃত হাসিনুর রহমান (হাসুর) শার্ট ও লুঙ্গি মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) টয়লেটের প্লাব (টাংকি) এর ভিতর থেকে ও
৪। একটি তাবিজ মৃত হাসিনুর রহমান (হাসু) বাড়ীর গেট সংলগ্ন স্থান হতে উদ্ধার মূলে জব্দ করা হয়।