ঢাবি প্রতিনিধিঃ আজ ২৩ শে আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালো দিবস’
২০০৭ সালের ২০-২৩ আগস্ট সেনা সমর্থিত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারিবারের ওপর হামলা চালায়।
ওই বছরের ২০ আগস্ট ঢাবিতে খেলার মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে উপস্থিত ছাত্র ও সেনা সদস্যদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালান সেনা সদস্যরা।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোয় লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেমকে সেনা সদস্যদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়।
পরদিন ২১ আগস্ট নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। তখন তাদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। নীলক্ষেত, টিএসসি, কার্জন হল এলাকাসহ ক্যাম্পাস পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে আহত হন শতাধিক ছাত্র। আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।
২২ আগস্ট এই আন্দোলন গোটা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে।
২৩ আগস্ট রাতে আটক করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদকে। তাদের চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় অজানা স্থানে। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক সাইদুর রহমান খান, আবদুস সোবহান, মলয় কুমার ভৌমিক, দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সেলিম রেজা নিউটনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে ঢাবির আরও দুই শিক্ষক ও ৩ ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে সেনা সমর্থিত সরকার। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
দীর্ঘ ৬৬ দিন পর খুলে দেয়া হয় ঢাবি ও রাবি ক্যাম্পাস। ধীরে ধীরে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির আন্দোলনও বেগবান হতে থাকে। ‘ছাত্রবন্ধু’ ও ‘নির্যাতন প্রতিরোধ ছাত্র আন্দোলন’ ছাত্র-শিক্ষক মুক্তির আন্দোলনে গতির সঞ্চার করেছিল। ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি আন্দোলনের কাছে হার মানে সেনাসমর্থিত সরকার। বাধ্য হয়ে গ্রেফতারকৃত ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দেয়া হয়।