জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল যুদ্ধে যাওয়ার মূল নির্দেশ ও অনুপ্রেরণা বলে জানিয়েছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশিদ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছেন তখন আমরা নিশ্চিত হয়ে গেছি ঘরে আর থাকার সময় নেই, যুদ্ধে যেতে হবে।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি দেশের মানুষের ভালোবাসা ও বিশ্বাস ছিল।সেটা বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেই পাকিস্তানি বন্দি দশা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্তি করতে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যখন ৭ মার্চের ভাষণ দেন তখনি আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ডাক এসে গেছে।
তিনি বলেন, ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী থেকে একজন এসে যখন বঙ্গবন্ধুকে বললো আপনাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশের বাঙালিরা আমাকে মারবে, এটা বলে তাদের কথায় পাত্তা দেননি তিনি।
ঢাকা- ৬ আসনের এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে এমন ভালোবাসতেন যে তিনি একজন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে তিনি বাসায় ওই ধরনের কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখেননি।
জাসদের কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে যেদিন জাসদ হয়েছে তারপরের দিন যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করছি আমরা। এ জাসদ
মুক্তিযুদ্ধ করেছে। তারা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে করে এসে অস্ত্র ভাগ করে আলাদা হয়ে গেলো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে জাসদ ট্যাংকের উপর বসে উল্লাস করছে, দুঃখের বিষয়।
আমেরিকার সমালোচনা করে কাজী ফিরোজ বলেন, স্বাধীনতার সময়ও বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনদেশ, এদেশের ভালো মন্দ দেশের জনগণ ঠিক করবে। এদেশ আমাদের, দেশের ভালো মন্দ আমরা ঠিক করবো, কীভাবে নির্বাচন হবে, আমরা ঠিক করবো। কিন্তু এখনো তারা (বিদেশি) ব্যস্ত হয়ে পড়ে, সারাদিন দিন দৌড়াদৌড়ি করে কী করবে। এ তারাই স্বাধীনতার সময় সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে প্রতিশোধ নিতে মূল অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে পারিনি। আমরা কিছু ছাত্রলীগ নেতারা মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসায় গেলেও তারা কোনো নির্দেশনা দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তার কন্যাদের বাংলাদেশে আসতে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল কিন্তু সাহসী পিতার সাহসী কন্যা শেখ হাসিনা সব বাঁধা উপেক্ষা করে মাতৃভূমিতে ফিরে হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। বাবার (বঙ্গবন্ধু) মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন বলেই জীবন বাজি রেখে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য ২১ বছর লড়াই করেছেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের মানুষের পালস বুঝে কাজ করতেন। শেখ হাসিনা তারই আদর্শের ধারণ করে মানুষের পালস বুঝে কাজ করে যাচ্ছেন।
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. সামসুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, জানাতুল বাকী, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. ইফফতা আরা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটের গভর্নিং বডির সদস্য ও মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু প্রমুখ।