জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরে ভাষাসৈনিক ও গণসঙ্গীত শিল্পী কয়েস উদ্দিন সরকার চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। বার্ধক্যজনিত নানারোগে আক্রান্ত হয়ে নিজবাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন চিরকুমার ও শতবর্ষী এই দেশপ্রেমিক। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দান করা হয় তাঁর মরদেহটি।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাত ১১টায় পৌর শহরের বেলটিয়া গ্রামে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা কয়েস উদ্দিন ভাষা সংগ্রামের ওপর গান লিখে নিজেই গেয়ে বাঙালিদের উদ্বুদ্ধ করতেন। ২১ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানিদের গুলিতে রফিক, জব্বার, বরকতেরা শহীদ হলে তিনি জামালপুর থেকে আন্দোলন শুরু করেন। বাঙালিদের উদ্বুদ্ধ করতে আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি তিনি গান লিখতেন ও গাইতেন। সেই গান এ অঞ্চলের বাঙালির অন্তরে ব্যাপক উদ্দীপনা জাগায়। তারপর থেকেই তিনি সারাজীবন অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি-বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে কালজয়ী গান রচনা করেন। আইয়ুববিরোধী গান রচনার জন্য চিরকুমার কয়েস উদ্দিন মার্শাল ল’র সময় এক বছর জেল খাটেন।
তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় কয়েস উদ্দিন সরকারের নিজবাড়ি বেলটিয়ায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সকাল ১১টায় দয়াময়ী সড়কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁর মরদেহ রাখা হয় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এরপর জেলা সদর মডেল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় তাঁর দ্বিতী জানাজা। এরপর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মরদেহটি শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে দান করা হয়।
কয়েস উদ্দিন সরকারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাঁর মৃত্যুতে দেশ হারালো আমৃত্যু সংগ্রামী এক দেশপ্রেমিককে।