২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর দিবাগত রাতে, ফেসবুকে ভারতবিরোধী কিছু পোস্টের জের ধরে আবরার ফাহাদ(তড়িৎকৌশল ‘১৭) এর উপর রাতভর নির্যাতন চালায় বুয়েটের শেরে বাংলা হলের তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। সারারাত নির্মম নির্যাতনের ভয়াবহতায় ৭ই অক্টোবর একটি মেধাবী দেশপ্রেমিক স্বত্তা আজীবনের জন্য নিভে যায়। ছাত্ররাজনীতি থেকে বুয়েটের অর্জন শূন্য হলেও সূক্ষচিন্তায় মনে হয় প্রাপ্তি না থাকলেও হারিয়েছে অনেক কিছু, যা কখনই মুছার নয়।
বুয়েটে নিহত আবরার ফাহাদ
আজ সেই ভয়াল কালো রাত যে রাতে বুয়েট ১৭ বেজের আবরার ফাহাদ কে শিবির বা জঙ্গি” ট্যাগ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছিল ছাত্রলীগের সাবেক কিছু কুলাঙ্গাররা । এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রত্যেকের ফাঁসি অতি দ্রুত কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি ।
এই শিবির ট্যাগিং এর উপকরণ গুলো ছিলো নামাজ পড়া, মসজিদে যাওয়া বা ফেসবুকে ইসলামি পেইজ ফলো করা ইত্যাদি। কাউকে শিবির ট্যাগ দেয়ার পর চলতো রাতভর পেটানো, পুলিশে দেওয়া, হল থেকে বহিস্কার করা সব। আবরার হত্যার কিছুদিন আগে শেরে বাংলা ও আহসান উল্লা হলের কয়েকজন ছেলেকে র্যাগিং এর নামে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। বাঁধন বুয়েট জোনের কয়েকজন তা নিয়ে ছত্রকল্যাণ পরিচালক মহোদয়ের কাছে গেলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়।
“শিবির বা জঙ্গি” ট্যাগ এর ভয়ে অনেকেই নিজেদের ধর্মীয় প্র্যাক্টিস লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হত। আবরার ফাহাদকেও এইভাবে ট্যাগিং করে তার উপর নির্যাতন বৈধ করা হত, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিক্রমায় আবরারের মৃত্যু হয়!
মৃত্যু আবরারকে এভাবেই দুই সিড়ির ল্যান্ডিং পয়েন্টে নিয়ে যায় খুনিরা
আবরার ফাহাদের জীবনের বিনিময়ে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা পেয়েছে সুশৃংখল, রাজনীতিমুক্ত, নিরাপদ ক্যাম্পাস । বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় হয়েছে আসামীদের আপিল করা ব্যতীত আর কোনো অগ্রগতি হয়নি মামলার। ২৫ জনের মধ্যে ৩ জন পলাতক ব্যতীত ২২ জনই কারাগারে আছে, এর মধ্যে ১৭ জন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামী কনডেম সেলে আছে।
আমাদের দেশের উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি সাধারণত রায়ের সিরিয়াল অনুসারে হয়। এখন সম্ভবত ২০১৯-২০২০ এর দিকের মামলার শুনানি চলছে। মামলার শুনানি কবে নাগাদ শুরু হতে পারে সেটা বলা একটু কঠিন। তবে আমাদের চাওয়া, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আপিল শুনানি, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের নেয় বিচারকার্য শেষ করে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে রায় কার্যকর করার আশা প্রকাশ করেন আপনার ফাহাদের পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষী গন ।