Connect with us

top1

১৫ নয়, ১৭ অক্টোবর সই হবে ‘জুলাই সনদ’

Published

on

অলটাইম নিউজ ডেস্ক

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ব্যাপক জনসমাগম নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পূর্ব ঘোষিত ১৫ অক্টোবরের পরিবর্তে আগামী ১৭ অক্টোবর সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা শনিবার সারাদিন আলোচনা করেও শেষ পর্যন্ত সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে পারেনি। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই পদ্ধতি নির্ধারণ করতে আরও দুই-এক দিন সময় লাগতে পারে।

তারিখ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত

সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন। আলোচনায় উঠে আসে যে, আগামী ১৫ অক্টোবর বুধবার কর্মদিবস হওয়ায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জনগণের উপস্থিতি নিশ্চিত করা কঠিন হতে পারে। তাই অনুষ্ঠানকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে এবং জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে তারিখ পরিবর্তন করা প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রস্তাবে সম্মতি দেন। এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ফের বৈঠক

শনিবার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও, ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা আলোচনা করে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিশনের এক সদস্য জানান, বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং এসব মতামত সমন্বয় করে সরকারের কাছে একাধিক প্রস্তাব পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনও চূড়ান্ত সমাধানে আসা যায়নি। রবিবার (আজ) কমিশন আবারও বৈঠকে বসবে।

কমিশনের আরেকটি সূত্র জানায়, প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে দুই-একদিন সময় লাগবে। মূলত, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকায় বাস্তবায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে সময় লাগছে। কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো উভয় পক্ষ থেকেই এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সংবিধানের ৪ ক নিয়ে মতানৈক্য

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪ ক (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি প্রদর্শন সংক্রান্ত) বিলুপ্তির প্রস্তাব ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অবস্থান জানাতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশ জাসদ : ৪ ক ধারার প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে এবং তারা এটি বিলুপ্তির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এই প্রস্তাব নতুন বিতর্ক তৈরি করবে বলে মনে করছে এবং কমিশনকে এ পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।

জেএসডি (আসম আবদুর রব) ধারাটি সম্পূর্ণ বিলোপের পরিবর্তে ইতিহাসভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক সংশোধনের পক্ষে মতামত দিয়েছে।

পিআর পদ্ধতি নিয়ে ৯ দলের উদ্যোগ, বিএনপির অনড় অবস্থান

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আগে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতদ্বৈধ নিরসনের চেষ্টা চলছে। গণতন্ত্র মঞ্চের অন্তর্ভুক্ত ছয়টি দলসহ মোট নয়টি দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করে সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে দলগুলো এখনও বিএনপিকে এই পদ্ধতির পক্ষে সম্মত করতে পারেনি। এই অবস্থায়, কমিশন সরকারের কাছে যেসব সুপারিশ পাঠাবে, তার খসড়া দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে উদ্যোগী দলগুলো।

পিআর বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বদানকারী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

গণতন্ত্র মঞ্চের একটি শরিক দলের প্রধান জানান, পিআর সমস্যার সমাধান হলে অন্যান্য বিষয় (যেমন গণভোটের সময় বা পদ্ধতি) নিয়েও মতপার্থক্য থাকবে না। বিএনপি পিআর মেনে নিলে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যরা নিজেদের অবস্থানে ছাড় দিতে প্রস্তুত। কিন্তু বিএনপি অনড় থাকায় সমঝোতার জন্য উচ্চকক্ষে ৫০ শতাংশ মেজরিটির সংশোধনী প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা পিআরে সম্মত হয়নি।

গণভোটের দায়িত্ব কে দিয়েছে?: আমীর খসরু

পিআর পদ্ধতি গ্রহণে বিএনপির অনড় অবস্থান শনিবার আরও একবার স্পষ্ট হয় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্যে। রাজধানীর এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতির পক্ষের দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে গিয়ে ম্যান্ডেট বা সম্মতি আনা। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পিআরের জন্য আমাকে গণভোটে যেতে হবে কেন? … এই দায়িত্ব আমাদেরকে কে দিয়েছে?”

এর আগে, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, “আমরা বলেছি, আপনি গণভোট দিয়ে দেন। পিআর এর পক্ষে জনগণ কী মতামত দেয় (দেখেন)।”

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © 2025. powered by All Time News.