ক্যাম্পাস

সায়মা মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষদিনে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

Published

on

ডেস্ক নিউজ  

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনে বিক্ষোভ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড অবরোধ করে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, সায়মা, সায়মা’, ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘কে মেরেছে, কে মেরেছে, প্রশাসন প্রশাসন’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, রাবি মেডিকেল সংস্কার’, ‘অবহেলায় শিক্ষার্থী মরে, প্রশাসন কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচারের সঙ্গে তারা আরও তিনটি দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো- প্রশাসনের মাধ্যমে সায়মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া; যা শিক্ষার্থীরা ১ কোটি টাকা প্রস্তাব দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সংস্কার ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সুইমিংপুলের একটি অংশের গ্যালারি সায়মার নামে নামকরণ।

শিক্ষার্থীরা, সায়মা হোসাইনের মৃত্যু মোটেও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটি স্পষ্টই হত্যাকাণ্ড। যা শুধুমাত্র প্রশাসনের অবহেলার কারণে ঘটেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। আজ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন জারি রেখেছি। এই প্রতিবেদনে যদি দেখি যে প্রশাসন কোনো অবহেলা-গড়িমসি করেছে অথবা অপ্রাসঙ্গিক কোনো কিছু তুলে ধরেছে, সেক্ষেত্রে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেব।

তারা আরও বলেন, আমরা চারটি দাবি নিয়ে এখন পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান করছি এবং অপেক্ষা করছি আজকের প্রতিবেদনের জন্য। এই প্রতিবেদনে যদি দেখি যে আমাদের আশানুরূপ ফলাফল প্রকাশ হয়নি, সেক্ষেত্রে আমরা তীব্রতর আন্দোলনের ডাক দিবো এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অকার্যকর ঘোষণা করব।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (রাকসু) সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জায়িদ হাসান জোহা বলেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ সম্পূর্ণ সহমত। আমরা চাই অনতিবিলম্বে এই দাবিগুলো মেনে নিয়ে সেগুলো কার্যকর করা হোক।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারসহ বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক আকারে সংস্কার দরকার। সেখানে যেই জিনিসগুলো বাতিল করে পুনরায় স্থাপন করা দরকার, তার মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগণ্য হচ্ছে অযোগ্য কর্মকর্তাগণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে প্রশিক্ষকের সামনে যদি একজন প্রশিক্ষণার্থী মারা যায় আর মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে অক্সিজেনের অভাবে যদি রোগী মারা যায়, তাহলে কিছু গাধা আর গাধার আস্থাবল রেখে লাভ কি? সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হোক। যাদের অবহেলার কারণে এরকম ঘটনা ঘটেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। 

উল্লেখ্য, গত রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে নেমে পানিতে ডুবে যান সায়মা হোসাইন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ও মন্নুজান হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version