অলটাইম নিউজ ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ঘোষণায়। তিনি স্পষ্টভাবে ইসরায়েলকে বলেছেন, গাজায় অবিলম্বে বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে। কারণ, হামাস তাদের হাতে থাকা অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে।
শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প জানান, “হামাসের সাম্প্রতিক ঘোষণা আমাকে বিশ্বাস করিয়েছে যে তারা দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, “জিম্মিদের নিরাপদে বের করে আনতে হলে এখনই ইসরায়েলকে আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, যার লক্ষ্য কেবল গাজায় নয়, বরং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে বহু প্রতীক্ষিত স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা।”
গত সপ্তাহে ট্রাম্প যুদ্ধের অবসানে ২০ দফার একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। সেটিকে সমর্থন জানিয়েই হামাস ঘোষণা করেছে—তাদের হাতে থাকা জীবিত ও মৃত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেবে তারা। পাশাপাশি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনায় বসার আগ্রহও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। ইসরায়েল এর আগেই ট্রাম্প প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল। হামাসের সম্মতির ফলে বলা যায়, দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এই প্রথম উভয় পক্ষ শান্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হঠাৎ ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে হামলা চালিয়েছিল গাজার নিয়ন্ত্রক সংগঠন হামাস। এতে অন্তত ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় তারা। প্রতিক্রিয়ায় ওই দিন থেকেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজায় অভিযান শুরু করে। টানা দুই বছরে ভয়াবহ হামলায় প্রায় ৬৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি। এর বড় অংশই নারী, শিশু ও নিরীহ বেসামরিক মানুষ।
এই সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছে হামাস। তবুও তাদের হাতে এখনও ৩৫ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন—রোববারের মধ্যে প্রস্তাবে সাড়া না দিলে হামাসকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। তাঁর সতর্কবার্তা ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পরেই হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে তারা জানিয়েছে, জিম্মি মুক্তি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মত হলেও অন্যান্য শর্ত নিয়ে আলোচনা হবে ‘একীভূত ফিলিস্তিনি জাতীয় কাঠামো’-এর ভিত্তিতে। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে হামাস আসলে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিই জোরালোভাবে সামনে এনেছে।