ডেস্ক নিউজ
বিশ্বজুড়ে শিশু অধিকার, ন্যায়বিচার ও সামাজিক পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা সাহসী কিশোর-কিশোরীদের সম্মান জানাতে প্রতিবছর প্রদান করা হয় আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ‘International Children’s Peace Prize’ যা পরিচিত ‘শিশুদের নোবেল’ নামে পরিচিত। এতে এ বছর মনোনীত হয়েছেন জামালপুরের দুইবোন কারিমা ফেরদৌসী কেকা ও কাশফিয়া জান্নাত কুহু।
পুরস্কারটি দিয়ে থাকে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংস্থা কিডসরাইট ফাউন্ডেশন। তারা এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২০০ শিশু অধিকারকর্মীকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেছে।
বড় বোন কারিমা ফেরদৌসী কেকা বর্তমানে ঢাকার একেএম রহমত উল্লাহ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। একাদশ শ্রেণি শেষ করে দ্বাদশে উত্তীর্ণ হওয়ার সময় কলেজে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন মেধাবী এই তরুণী। শুধু পড়াশোনা নয়, ছোটবেলা থেকেই তিনি সমাজ নিয়ে ভাবেন, সমাজের জন্য কাজ করতে চান। সেই চেষ্টারই ফলস্বরূপ তিনি জড়িয়ে পড়েন শিশুবিয়ে প্রতিরোধ, লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির কাজে।
ছোট বোন কাশফিয়া জান্নাত কুহু রওশন আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বোনের দেখাদেখি তিনিও ছোটবেলা থেকেই যুক্ত হয়েছেন সামাজিক সচেতনতামূলক নানা উদ্যোগে। কুহুর কাজের ক্ষেত্রেও রয়েছে শিশুবিয়ে প্রতিরোধ, জেন্ডার ইকুয়ালিটি এবং শিশুদের অধিকার।
মনোনীত কারিমা ফেরদৌসী কেকা বলেন, দুই বোন একসাথে এমন একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্বীকৃতির জন্য মনোনীত হওয়াটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। আমরা চাই, আমাদের কাজের মাধ্যমে সমাজে সত্যিকারের পরিবর্তন আসুক। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
প্রাথমিকভাবে মনোনীত হওয়ার খবর পেয়ে বিস্মিত কুহু বলেন, আমি জানতামই না যে আমার নাম পাঠানো হয়েছিল। হঠাৎই গতকাল সকালে আপু ঘুম থেকে তুলে বললো আমিও শিশু শান্তি নোবেলের জন্য মনোনীত হয়েছি! এই খবরে দুই বোনের মধ্যে তৈরি হয় আনন্দের এক বিশেষ মুহূর্ত, যা তারা আজীবন মনে রাখবেন।
এই দুই কিশোরীর সাফল্যে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত তাদের বাবা কাইউম হিলালী মাইকেল ও মা শিউলী খাতুন।
দুই মেয়ের অভাবনীয় এই অর্জনে আবেগাপ্লুত বাবা বলেন, সারা বিশ্বের বাছাইকৃত কিছু শিশুর মধ্যে আমার দুই মেয়েই মনোনয়ন পেয়েছে এটা কত বড় গর্বের বিষয়! আল্লাহ যেন তাদের আরও বড় কিছু করার শক্তি দেন।
তিনি আরও বলেন, এরা আসলে ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রমী। শিশুকালে অন্যরা যেমন নিজেদের নিয়ে ভাবে, এরা মানুষ নিয়ে, দেশ নিয়ে ভাবে। নিজের পোশাকের চেয়ে পথশিশুর পোশাক নিয়ে বেশি ভাবতো।