ঢাকা — বাংলাদেশি শিক্ষাকর্মী রেজওয়ানের প্রতিষ্ঠিত ভাসমান স্কুল প্রকল্পকে এই বছরের UNESCO কনফিউশিয়াস লিটারেসি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। টিবিএসের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পুরস্কার পাঠযোগ্যতা ও সাক্ষরতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী ও কার্যকর উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেয়।
রেজওয়ানের উদ্যোগটি বন্যা-প্রবণ ও নদীভিত্তিক চরাঞ্চলের শিশু ও সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে গড়ে তোলা হয়েছে। ভাসমান স্কুলগুলো শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি লাইব্রেরি, স্বাস্থ্যসেবা ও কমিউনিটি হাবের ভূমিকা পালন করে থাকে, ফলে দুর্যোগকালীন সময়েও শিক্ষাসেবা অব্যাহত রাখা যায়। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রকল্পটি জেলাপ্রান্ত অঞ্চলের অসংরক্ষিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে মৌলিক সাক্ষরতা ও জীবনপাঠের দক্ষতা।
UNESCO কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের প্রশংসা করে বলেছে যে ভাসমান স্কুল মডেল পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মধ্যেও টেকসই শিক্ষা নিশ্চিত করার একটি নজির স্থাপন করেছে। বিশেষ করে বন্যা ও জলবায়বিক বিপর্যয়ের জটিল বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে এই ধরনের নমনীয়—মোবাইল—শিক্ষা কাঠামো দূরদর্শিতার উদাহরণ।
প্রকল্পটি পরিচালনাকারী সংস্থা দীর্ঘকাল ধরে নদীভিত্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করে আসছে; ভাসমান স্কুলগুলোতে স্থানীয় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল ও পাঠ্যবইয়ের ব্যবস্থা এবং মেয়েদের শিক্ষায় উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগগুলো উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের কাজের স্বীকৃতি বেড়ে যাওয়ায় ভবিষ্যতে সমর্থন-নিয়োগ ও রপ্তানির নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে।
স্থানীয় সমাজ ও শিক্ষানীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের উদ্ভাবন বাংলাদেশে জলবায়ু-সংবেদনশীল অগ্রাধিকার এলাকায় শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি মডেল হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। তারা আশা করছেন, সরকারি ও বেসরকারি দাতারা সমন্বিতভাবে এ ধরনের প্রকল্পকে স্কেল-আপ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে আগ্রহী হবেন।
পুরস্কার প্রাপ্তির খবর দেশের শিক্ষা ও সমাজক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে; প্রকল্প পরিচালনা ও সম্প্রসারণে নতুন সহযোগিতা ও তহবিল আকর্ষণের সম্ভাবনাও উন্মুক্ত হচ্ছে। টিবিএসের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জানা যায়, প্রাপ্তি সম্পর্কে প্রকল্পের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য শীঘ্রই প্রদানের আশ্বাস আছে।