আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ৩ নভেম্বর ২০২৫ — ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধে গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রবাহ বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক মানুষ ক্ষুধা ও ঠান্ডায় দিন কাটাচ্ছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, এটি একটি “মানবসৃষ্ট দুর্যোগ”, যা দ্রুত সমাধান না হলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে।
🔹 ক্ষুধায় মৃত্যুর মিছিল
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে, যার মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। চলমান যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জন, যার মধ্যে ১১৯ শিশু। জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ৬ লাখের বেশি মানুষ এখন চরম ক্ষুধার মুখে, এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
🔹 খাদ্য সংগ্রহে গুলিবর্ষণ
ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি জিকিম ক্রসিংয়ে ৭৯ জন aid-seeker গুলিতে নিহত হন। রাফাহ ও খান ইউনিসে আরও কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, নিহতরা শুধু খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছিলেন, কোনো হুমকি সৃষ্টি করেননি।
🔹 জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিভাগের উপপ্রধান জয়েস মুসুয়া নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে। এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং একটি সৃষ্ট বিপর্যয়।” তিনি জানান, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে এবং শিগগিরই দক্ষিণাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়বে।
🔹 মানবিক সহায়তার দাবি
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবিলম্বে সব সীমান্ত খুলে দেওয়া, শিশু খাদ্য, ৫০০টি ত্রাণ ট্রাক এবং ৫০টি জ্বালানি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। তারা ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করেছে।