Connect with us

ক্যাম্পাস

ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকেই অধিক প্রাধান্য দিয়েছে: ডাকসু সংস্কার প্রশ্নে ফরহাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারও করা হয়েছে। এ সংস্কারে অন্যান্য সংগঠনের তুলনায় ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকেই অধিক প্রাধান্য দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ।

আজ বুধবার (১৮ জুন) নিজের ফেসবুক স্টাটাসে এমন অভিযোগ তোলেন তিনি।

তিনি লিখেন, ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যান্য সংগঠনের তুলনায় ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকেই অধিক প্রাধান্য দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সময়ের চাহিদার আলোকে নারী ও সমতা বিষয়ক সম্পাদক এবং ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক পদসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা। ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আমরা এই যৌক্তিক প্রস্তাবনাগুলো উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু ছাত্রদল প্রস্তাবিত অনেক নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টি করা হলেও সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ এ পদগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

এস এম ফরহাদ বলেন, একটি সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কত দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, তার একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা যুক্ত করার আহ্বান জানায় ছাত্রশিবির। ডাকসু নিয়মিত অনুষ্ঠানের জন্য এটি ছিল অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা আমলে নেয়নি। পাঠাগার, পাঠকক্ষ ও কমনরুম বিষয়ক সম্পাদক এবং কাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন বিষয়ক সম্পাদক দুটি ভিন্ন পদ সৃষ্টি জরুরি ছিল। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট সুবিধা ও খাবারের পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ এবং নিয়মিত তদারকি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে, গবেষণা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও শিক্ষার্থীদের দক্ষ ও প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে পাঠাগার ও পাঠকক্ষ ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বৃদ্ধি জরুরি ছিল। কিন্তু এবারও দুটি বৃহৎ বিষয়কে এক সম্পাদকের অধীনে রাখা হয়েছে।

শিবির নেতা বলেন, শিক্ষার্থীরা চেয়েছিল রাজনীতির গুণগত সংস্কার। সে লক্ষ্যে ডাকসু নির্বাচনে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারত। এর মাধ্যমে দেশের ছাত্ররাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসত। নেতা হওয়ার জন্য বছরের পর বছর ইয়ার ড্রপ দেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করা যেত। কিন্তু শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠনকে সুবিধা দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বয়সসীমার বাধ্যবাধকতাও বাতিল করেছে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা উপেক্ষিত হয়েছে। এতে নিয়মিত অধ্যয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন নেতৃত্বের অযাচিত দৌরাত্ম্য এবং শিক্ষা-অনুপযোগী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনেও নির্দিষ্ট একটি শিক্ষক সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে; ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ধাপে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশন গঠনের ঘোষণার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও রোডম্যাপ প্রকাশ বা দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছে, সেহেতু আমরা আশাবাদী যে প্রয়োজনীয় অবশিষ্ট সংস্কার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সম্ভব হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক মনোভাব একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে কিনা— এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © 2025. powered by All Time News.