top2

লাঠি হাতে বৃদ্ধকে উচ্ছেদের নেতৃত্বে ডাকসুর সর্বমিত্র

Published

on

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত ও ফুটপাত দোকান মুক্ত করার নামে ‘উচ্ছেদের’ সময় গভীর রাতে এক বৃদ্ধকে লাঠি হাতে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে ডাকসুর সদস্য সর্বমিত্র চাকমার বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। সোমবার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এই সদস্যের এমন কাণ্ডে সমালোচনা মুখর হয়েছেন অনেকে।

ওই বৃদ্ধকে তাড়াতে সর্বমিত্র চাকমা ও প্রক্টর অফিসের তিন নিরাপত্তা কর্মীকে ওই সময় ঘটনাস্থলে দেখা যায়।

ভিডিওতে দেখা যায় তাদের মধ্যে ‘প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য’ লেখা জ্যাকেট পরিহিত একজন লাঠি দিয়ে আঘাত করেন, যা হাতে থাকা ব্যাগ দিয়ে ঠেকাতে দেখা যায় ওই বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে।

শহীদুল্লাহ হলের সামনে সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে মঙ্গলবার রাতে নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর অফিসের নিরাপত্তা কর্মীদের প্রধান ইউসুফ হারুন।

তিনি বলেন, “ওই সময় আমাদের প্রক্টর অফিসের তিনজন স্টাফ ছিলেন সাথে (সর্বমিত্র চাকমার)।”

ডাকসুর সদস্য সর্বমিত্র চাকমা কেন লাঠি হাতে বৃদ্ধকে শাসাচ্ছেন সে বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিক ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

তবে তার ফেইসবুকে এক পোস্টে এ ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেছেন, এ বৃদ্ধকে বারবার ক্যাম্পাস থেকে সরানো হলেও তিনি যাচ্ছেন না। তার সঙ্গে থাকা আরেক বৃদ্ধ ‘মাদকাসক্ত’, তার ব্যাগ থেকে ‘মাদক’ পাওয়া গেছ। এদের ‘তাড়ানো’ কঠিন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আর এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এরকম একটা ঘটনা শুনেছি। তবে পুরোপুরি জানি না। কেউ যদি এটা নিয়ে অভিযোগ করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”

এ বিষয়ের ব্যাখ্যায় সর্বমিত্র চাকমা ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “যে বৃদ্ধ লোকটিকে দেখছেন, আমি শুরুর দিন থেকে এই লোকটাকে সেই মেট্রো স্টেশন থেকে তুলছি প্রতিরাতে। লোকটা ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়ই না। ওনার সাথে আরেকজন আরো বৃদ্ধ, উনিও মাদকাসক্ত, এই লোকের কাছে এর আগে একবার গাঁজা পাওয়া গেছিল।”

“এই লোকগুলোকে তোলাটা অত্যন্ত কঠিন, তুললে আগায় ৪ কদম। তাই, লাঠিসোটা ছাড়া বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন না করে তাদের তোলা যায়ই না। আমার নিজের এটার জন্য স্বার্থসিদ্ধি নাই, আমি আমার ক্যাম্পাসকে ভবঘুরে-পাগল-গাঁজাখোর মুক্ত দেখতে চেয়েছিলাম শুধু। আজ আমাদের নারী শিক্ষার্থী দু’জন হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন। আমার চাওয়া, এই ভবঘুরে-পাগল হ্যারাস মুক্ত ক্যাম্পাস গড়া।”

তিনি লেখেন, “এরকম প্রতিনিয়ত বিতর্ক আমার ব্যক্তিগত জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে। এভাবে প্রক্টরিয়াল টিমের সাথে রাতে পাহারা দিয়ে উচ্ছেদ করাটা ডাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যের কাজ না। আবার আমার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ছে না এমনটাও না।

“কিছুদিন আগে তিনজন মাদকাসেবীকে তুলতে গিয়েছিলাম। একইভাবে পোস্ট করে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হয়েছে। এদের তাড়ানোর জন্য লাঠি হাতে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না, যারা মাঠে কাজ করে তারাই জানে এটা কতটুকু কঠিন। একজন সদস্য হিসেবে আমি নিশ্চয় নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়তে আমার তরফ থেকে কাজ করব, কিন্তু মাঠে আমি আর থাকছি না।”

ডাকসুর সদস্য হিসেবে সর্বমিত্র এমন কাজ করতে পারেন কিনা জানতে ভিপি আবু সাদিক কায়েম ও জিএস এসএম ফরহাদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ধরেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version