top1

গাজা শান্তি আলোচনা: প্রথম দিনেই আশার আলো

Published

on

অলটাইম নিউজ ডেস্ক

মিশরের শারম আল-শেখে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই পরোক্ষ আলোচনার প্রথম দিনটি শেষ হয়েছে আশাব্যঞ্জকভাবে। আলোচনা সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, উভয় পক্ষই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে, যা পরবর্তী ধাপের জন্য একটি সুস্পষ্ট পথরেখা তৈরি করেছে।

সোমবারের (৬ অক্টোবর) বৈঠকের পর, প্রতিনিধিরা আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আবারও আলোচনায় বসবেন। এই আলোচনার প্রধান লক্ষ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ খুঁজে বের করা।

প্রথম দিনের আলোচনায় মূলত তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে আলোচনা হয়েছে: বন্দি বিনিময়, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং গাজায় নির্বিঘ্নে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করা। হামাসের প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছেন যে, ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলা বন্দি বিনিময়ের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়কে আরও জটিল করে তুলছে।

হামাসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন সংগঠনটির প্রবীণ নেতা খালিল আল-হাইয়া ও জাহের জাবারিন। উল্লেখ্য, গত মাসে দোহায় ইসরায়েলি হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এই দুই নেতাই বর্তমান আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্রুত বন্দি বিনিময় সম্পন্ন করতে আগ্রহী, যাতে তাঁর শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের গতি ত্বরান্বিত হয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “বন্দিদের মুক্তির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে আমাদের টিম কাজ করছে এবং উভয় পক্ষের বন্দিদের তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন, “আমরা একটি ভালো চুক্তির কাছাকাছি চলে এসেছি। হামাস এখন এমন কিছু বিষয়ে সম্মত হচ্ছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” তবে তিনি তাঁর নিজস্ব কিছু অলঙ্ঘনীয় সীমা বা ‘রেড লাইন’ রয়েছে বলেও স্পষ্ট করেন।

এই আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিফেন উইটকফ এবং তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনার।

আজকের আলোচনাটি একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে, কারণ আজকের দিনেই হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের দুই বছর পূর্ণ হলো। সেই হামলায় ১,১৩৯ জন নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছিল। এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭,১৬০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৬৯,৬৭৯ জন আহত হয়েছেন, যা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা “গণহত্যামূলক অভিযান” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

দুর্ভাগ্যবশত, আলোচনার দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাবটি গাজা যুদ্ধের অবসানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে। তিনি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।

সার্বিকভাবে, মিশরে অনুষ্ঠিত এই আলোচনার প্রথম দিনটি শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি নতুন আশা জাগিয়েছে। তবে গাজায় চলমান সংঘাত এই শান্তি প্রচেষ্টার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

সূত্র: আল-জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version