দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মূল্যবোধের স্বার্থে ঢাকায় স্থাপিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুমোদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে মর্মে অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে আজ বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল চারটায় টিএসসির রাজুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়কে প্রত্যাখ্যান করে ‘লালকার্ড সমাবেশ’ থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়কে বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা মনে করি- জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধুনিক ভার্সন। এটি দেশে অবস্থান করলে দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিশীল হবে। মূল্যবোধ নষ্ট হবে। সমকামিতার মত জঘন্য বিকৃতি ও অপরাধকে বৈধতা দেয়া হবে।
পতিতাবৃত্তির নামে নারী নিপীড়ন ও নারী পাচারকে স্বীকৃতি দেয়া হবে। দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হবে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে। ধর্ম পালন ও প্রচারের স্বাধীনতা হরণ হবে। এককথায়, দেশের মানুষের সাথে এক ধরণের আদর্শিক কনফ্লিক্ট (সংঘাত) তৈরি হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ উপস্থিত হয়েছি জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের সাথে সরকার যে চুক্তি করেছে, লাল কার্ড দেখানোর মাধ্যমে সেটি বাতিলের দাবিতে। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান হচ্ছে- বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থাকবে না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকার কারো সাথে আলোচনা না করে বিদেশী পরামর্শে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে দেশের নানান গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে বিদেশীদের হাতে দিয়ে দিতে চাইছে।
এখন আবার ‘নন ডিসক্লোজার এ্যাগ্রিমেন্ট’ এর নামে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানী-রপ্তানীসহ দেশের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বকে আমেরিকার কাছে বিকিয়ে দিতে চাইছে! অথচ এদেশের ছাত্রজনতার জুলাইয়ের রক্তাক্ত আন্দালনটি ছিল ফ্যসিবাদ ও ভারতীয় তথা বৈদেশিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে।
কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি- সরকার জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে বাদ দিয়ে দেশকে আবারো বৈদেশিক আধিপত্যবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সংস্কারের নামে দেশকে আমেরিকানাইজেশন করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় তারই অংশ!সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাবি শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম, মুহিউদ্দিন রাহাত, জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ, রাব্বি হাসান, মুহম্মদ জিয়াউল হক, আবু জাফর, আব্দুল্লাহ আল মাহিন, আব্দুল বাসেত, জাহিদুল, শিহাব, এশাসহ আরো অনেকে।
শিক্ষার্থীরা টিএসসির লালকার্ড সমাবেশ থেকে ৩ দফা দাবী পেশ করেন –১. জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অফিসের অনুমোদন বাতিল করতে হবে।২. অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধের পক্ষে অবস্থান করে অর্থাৎ সরকার এলজিবিটিকিউ বা সমকামিতা ও পতিতাবৃত্তিকে সমর্থন করে না- শিক্ষার্থীদেরকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।৩. আমেরিকার সাথে ‘নন ডিসক্লোজার এ্যাগ্রিমেন্ট’ নামক অধিনতামূলক গোপন চুক্তি করা যাবে না।
মানবাধিকার কার্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে শিক্ষার্থীরা দেশবাসীকে সপ্তাহব্যাপী ফেসবুক প্রফাইল পিকচার পরিবর্তন করে ‘লালকার্ড’ প্রফোইল পিকচার ব্যবহার কর্মসূচী পালন করার আহ্বান জানান।