Connect with us

ক্যাম্পাস

ইবিতে সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা, সাংবাদিকের পেটে লাথি মারার অভিযোগ নাহিদের বিরুদ্ধে

অভিযুক্ত নাহিদ হাসান

ইবি প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ‘দৈনিক আজকালের খবর’ ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির কোষাধ্যক্ষ রবিউল আলমকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাঁধা ও তলপেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১২ জুলাই) বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল খেলায় মারামারি চলাকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

নিরাপত্তা ও অভিযুক্তের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, বিকাল ৫ টার দিকে আমি অফিসে অবস্থান করছিলাম। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে ২০২০-২১ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ফুটবল খেলায় মারামারির ভিডিও করতে গেলে সহকর্মী সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ হামলার শিকার হয়। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে আমি উপস্থিত হলে দেখি তারা আরিফ বিল্লাহকে ঘিরে রেখেছে। ঐসময় ভিডিও করতে গেলে তারা আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে উদ্যত হলে আমি বলি ‘আমি সাংবাদিক এভাবে আপনারা আমাকে চার্জ করতে পারেন না।’ তখন কয়েকজন ‘তার মোবাইল কেড়ে নে, ওরে ধর, ভিডিও থাকলে ডিলিট দে’ বলে চারিদিক থেকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এসময় অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসান আমার তলপেটে লাথি মারে। তখন আমি মাটিতে পড়ে যায়। ওই সময় আমি আরও একজন সহকর্মীকে মারধর করতে দেখি। এসময় সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী সহ কয়েকজন আমাকে উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক রবিউল বলেন, ‘আমি তো জানিই না কিসের খেলা হচ্ছে। হট্টগোল শুনে অফিস থেকে বের হয়ে টিএসসিসির সামনে দাঁড়ালাম। কয়েকজন এসে আমার কাছে ভিডিও আছে কিনা জেরা করে এবং নাহিদ এসে সন্ত্রাসী কায়দায় লাথি মারে। মূলত গত ২০ এপ্রিল ক্যাম্পাসে বৈশাখীয়ানা মেলার আয়োজন করা হয়। ওই সময়কার প্রকাশিত এক সংবাদ জেরে গালিগালাজ ও দেখে নেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশোধটা আজকে নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ওই সন্ত্রাসীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান করছি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমাদের বিভাগের আন্তঃসেশন খেলা হচ্ছিল। তখন বল আউট হওয়া না হওয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়। জুনিয়র একজন সরি বলে সমাধান করা হয়। এসময় আমি সাংবাদিক কাউকে মারিনি।

তবে পরে সাংবাদিকের প্রশ্নে স্বীকার করে বলেন, ‘আমার গলা ধরছে তখন আমি কি করব?’ এ কথা বলেই তিনি প্রতিবেদকের কল কেটে দেন।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সহ সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি পুরো ঘটনায় উপস্থিত ছিলাম। তবে রবিউল প্রথম দিকে ছিল না। শেষ পর্যায়ে আসলে তাকেও কয়েকজন ঘিরে ধরে। নাহিদ এসে লাথি মারতে দেখা যায়।’

প্রত্যক্ষদর্শী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘আমি বাইরে হট্টগোলের আওয়াজ শুনে এগিয়ে যাই, তখন দেখি কয়জন মিলে একজন সাংবাদিককে মারতেছে। অপরদিকে আরেক সাংবাদিক আমার পিছন থেকে ওইদিকে যাচ্ছিল। তারপর সে ভিডিও করা শুরু করলে তার ভিডিও বন্ধ করতে একদল এসে বলে এবং তাকে মারতে উদ্ধত হয়। এবং একজন এসে তার পেটে লাথি মারে। কয়েকজন কিল-ঘুষি মারে।’

এ বিষয়ে ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘খেলার মধ্যে হঠাৎ মারামারি শুরু হলে সেখানে আরিফ (সাংবাদিক) ভিডিও করতে গেলে আরিফের ওপর ওরা চড়াও হয়। এরপর একই ভাবে ওরা রবিউল এবং আরেকজন সাংবাদিককে মারধর করে৷ ঘটনাস্থলে আমি তাদের আটকানোর চেষ্টা করি। তবে সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকদের সাথে এমন আচরণ কখনও কাম্য নয়।’

ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ ছাড় দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের কারণেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভালো আছে।সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব সম্মানের সাথে পালনের সুযোগ দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় প্রশাসনেরও সহযোগিতা করা উচিত।’

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © 2025. powered by All Time News.