ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবন সংলগ্ন একটি চায়ের দোকান থেকে শাখা ছাত্রদলের সহয়তায় তাকে আটক করা হয়।
পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাকে ইবি থানায় সোপর্দ করে।
আটকের সময় শিক্ষার্থীরা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা—এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
আটক হওয়া শিক্ষার্থীর নাম হুসাইন তুষার। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহসম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে সহপাঠীদের হয়রানিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
শাখা ছাত্রদলের সদস্য নুর উদ্দিন জানান, আজ দুপুরে ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক হটাৎ করে তার ডিপার্টমেন্টে আশেপাশে দেখলে ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী তাকে ধরে প্রক্টর স্যারের অফিসে নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেনাল কোড অনুযায়ী শান্তি নিশ্চিত করা এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিষয়ে পুলিশে ইনফর্ম করা হয়। পরে প্রক্টর অফিস থেকে থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ নিষিদ্ধ সংগঠনের কমিটিভুক্ত কর্মী হিসাবে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।আমাদের মনে হচ্ছে এসব ঘটনা ঘটার পেছনে কারন আমাদের ভিসি স্যার যে কয়েকদিন আগে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বলেছিলেন কে ছাত্রলীগ যে ছাত্রদল এসব আমাদের দেখার বিষয় না আমাদের কথা ছেলেটা মেধাবী কিনা। এ কথার মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডে যে ছাত্রলীগের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বা ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে একারণেই ছাত্রলীগের কর্মীরা একটু সাহস দেখাতে পারছে। আমরা মনে করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দুর্বলতার কারণেই ছাত্রলীগ এ সুযোগটা পাচ্ছে।
ঘটনার বিষয়ে আটক হওয়া তুষার বলেন, ‘আমি অনার্স শেষ বর্ষের সব পরীক্ষা শেষ করেছি। আজ মাস্টার্সের ক্লাস করতে এসেছিলাম। এতদিন স্বাভাবিক ভাবে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি।’
ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ’শিক্ষার্থীরা তুষার নামে এক ছাত্রকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা। আপাততে থানার হেফাজতে আছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান জানান, ‘শিক্ষার্থীরা তুষারকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য বলে স্বীকার করেছে। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’