অলটাইম নিউজ ডেস্ক
নরসিংদীতে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর ওই ঘটনা শহর বিএনপির এক নেতার ‘নির্দেশেই’ হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করেছে পুলিশ।
হামলার ঘটনায় করা মামলায় নরসিংদী শহর বিএনপির সহ-সভাপতি ও পৌর শহরের ইজারাদার আলমগীর হোসাইনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে মামলার বাদী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হামলার ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন- ফজলুল রশিদ ওরফে আদর (৪০), মো. সোহাগ মিয়া (৩৫), তানভীর মিয়া (২২), শফিকুল ইসলাম (৪৪), শান্ত মিয়া (২৩), কুদরত হাসান (২৩) এবং মো. রকিব খাঁ (৩০)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শেখ সাইয়াদুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ফজলুল রশিদের নামে একটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তারা সবাই বিএনপি নেতা আলমগীর হোসাইনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার সকালে নরসিংদী পৌর এলাকার আরশীনগরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে অভিযানে যান। এ সময় দুইজনকে আটক করা হলে তাদের ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়।
হামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম গুরুতর আহত হন। তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনায় শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শহর বিএনপির সহ-সভাপতি আলমগীর হোসাইনকে হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি গোলাম কবির কামাল বলেন, “আমার জানামতে, আলমগীর হোসাইন একজন বৈধ ইজারাদার হিসেবেই টাকা তোলেন। পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনাটি ন্যক্কারজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা দল থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনায় বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় আলমগীর হোসাইনের কাছে লিখিতভাবে জবাব চাওয়া হয়েছে। সঠিক তদন্ত এবং সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মামলার বাদী সোহেল আহমেদ বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা একটি গুরুতর অপরাধ। এ ঘটনায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মামলার তদন্ত চলছে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”