পরিবর্তন আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও টিকে থাকার লড়াই আমাদের হাতেই। আর এই টিকে থাকার অনুপ্রেরণা পরিবারে সবচেয়ে বেশি দেন নারীরা। নারীর অদম্য সাহসেই গড়ে উঠবে জলবায়ু সহনশীল বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর আলোকিতে অনুষ্ঠিত ‘অ্যানুয়াল কমিউনিটি অব প্রেক্টিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন-২০২৫ ইমপাওয়ার: ওম্যান ফর ক্লামেট রেজিলেন্ট সোসাইটিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা ঘরে ও সমাজে প্রতিদিন জলবায়ু সহনশীলতার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্যোগে, দারিদ্র্যে কিংবা অনিশ্চয়তায় তারা কখনও হার মানেননি। এই নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় টেকসই পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নের দর্শন বদলাতে হবে। বড় বড় মেগা প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি নদীভাঙন ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষদের সুরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রকৃত অর্থে টেকসই উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন প্রতিটি দুর্বল ও প্রান্তিক মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অভিযোজন প্রকল্পগুলোকে বড় আকারে সম্প্রসারণ করতে হবে।
স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টাগুলোকেই জাতীয় উন্নয়নের পরিধিতে অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি।
অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহযোগিতা প্রধান ডিপাক এলমার, জাতিসংঘ নারী সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনাম বক্তব্ দেন।
পরে, পরিবেশ উপদেষ্টা জলবায়ু অভিযোজনের বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। এই জাতীয় কনভেনশনে দেশের ১০০টি নারী-নেতৃত্বাধীন নাগরিক সংগঠন অংশ নেয়। তারা স্থানীয়ভাবে পরিচালিত জলবায়ু অভিযোজন উদ্যোগ উপস্থাপন করেন। এছাড়া শিল্পীরা পটের গানের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি ও তার রোধে করণীয় বিষয় উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জেলার নারীদের জন্য কাজ করা ১০ জন অদম্য নারীকে পুরষ্কার দেয়া হয়।