শহিদ আবরার ফাহাদের ৬ষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। বুধবার (৮ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সংগঠনটির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মু. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় শিল্প ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এইচ এম আবু মুসা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া শহর ছাত্রশিবির সভাপতি আবু ইউসুফ এবং কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচ এম আবু মুসা বলেন, ‘শহিদ আবরার ফাহাদের শাহাদাত আওয়ামী ফ্যাসিজমের সময়কার একটি আলোচিত ও মর্মান্তিক ঘটনা। স্বৈরাচারের জঘন্য কার্যকলাপ আর সীমাহীন জুলুম-নিপীড়ন আমাদেরকে আইয়ামে জাহেলিয়াতের কথা মনে করিয়ে দেয়। যেখানে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা ছিল দুঃসাধ্য বিষয়। আর বিরোধী মতাদর্শের লোকদের জন্য গোটা দেশটাই ছিল একটা অন্ধকার কারাগার। কারো ছাত্রশিবির পরিচয় জানতে পারলে তার এ দেশে বাঁচার কোনো অধিকার ছিল না। এমনকি শুধু শিবির সন্দেহে হাজারো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে পৈশাচিক নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের শিক্ষাজীবনে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এরই অন্যতম নমুনা বুয়েটের আবরার ফাহাদের শাহাদাত।’
প্রধান অতিথি আবু মুসা
বক্তব্যে গুমের শিকার ওয়ালিউল্লাহ-আল মুকাদ্দাস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই মেধাবী মুখ ওয়ালিউল্লাহ-আল মুকাদ্দাস ভাই আওয়ামী জুলুমের শিকার হয়ে এখনও গুম অবস্থায় আছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সেই সময়কার সবচেয়ে বড় মজলুমের উদাহরণ এ দু’জন ভাই। এ গুমের পেছনে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের দাবি করছি। আমাদের ভাই সাজিদ আব্দুল্লাহর লাশ ক্যাম্পাসে পাওয়া গিয়েছে, আজ পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা হয়নি, এটা সুস্পষ্ট প্রশাসনের ব্যর্থতা। আমরা প্রত্যাশা করি, দ্রুত সময়ের মাঝে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।’
সভাপতির বক্তব্যে মু. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতায় শহিদ আবরার ফাহাদের অবদান অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। বাংলাদেশের মানুষ মাতৃভূমির জন্য, দেশের জন্য, ইসলামের জন্য শাহাদাত বরণ করতে শুরু করেছে বহু আগে থেকে, আর যারা শাহাদাত বরণ করতে জানে তাদেরকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারে না। আমরা এ আয়োজন থেকে আমাদের সেসকল ভাইদের জন্য মাগফিরাত এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দোয়া করছি। শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে এদেশ গড়ার জন্য বদ্ধপরিকর।’
সভাপতির বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথির দোয়া পরিচলনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।