ডেস্ক নিউজ
আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালেই দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরুর আগেই বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানানো হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।
লেনদেন স্থগিত হওয়া পাঁচ ব্যাংক হলো— ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ থেকে এসব ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকবে।
এর আগে বুধবার (৫ নভেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে এ পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা করে রাষ্ট্রয়াত্ত করার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, একীভূতকরণের পরও ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে। ব্যাংকের গ্রাহকরা চলতি নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ ধাপে ধাপে আমানত উত্তোলন করতে পারবেন। তিনি জরুরি প্রয়োজন না হলে অযথা টাকা উত্তোলনের পরামর্শ দিয়েছেন।
গত কয়েক মাসে আর্থিক অনিয়ম ও পুঁজির ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন সংযুক্ত ব্যাংকটি সরকারি মালিকানায় পরিচালিত হবে এবং গ্রাহকরা বাজারভিত্তিক মুনাফা পাবেন। এছাড়া এলসি ও রেমিট্যান্সের কাজ আগের মতো চলবে।
গভর্নর নিশ্চিত করেছেন, ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী ছাঁটাই হবে না এবং সবাই আগের নিয়মে বেতন-ভাতা পাবেন। তিনি বলেন, “নতুন ব্যাংকটি হবে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। সরকারের পরিবর্তন হলেও এর স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।”
ড. আহসান আরও জানান, ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিশেষ অডিট চলছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে পুনর্গঠন বা আরও একীভূতকরণের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যারা ব্যাংক খাতের ক্ষতি করেছেন, তাদের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এর মধ্যে চারটির মালিকানায় ছিল এস আলম। অপরটির মালিকানায় ছিলেন ব্যবসায়ী নেতা নজরুল ইসলাম মজুমদার। তখন ব্যাংকগুলোর হাজার হাজার টাকা নামে-বেনামে সরিয়ে নেয়ায় আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে।