গাজীপুরের টঙ্গী টিএন্ডটি কলোনির বিটিসিএল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মাদানীর অপহরণ রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। অপহরণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ, সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ট্র্যাকিং এবং চিকিৎসকের রিপোর্টে একাধিক অসঙ্গতি দেখা যাওয়ায় বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একটি বিশেষ মহল উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘ইসকন’কে ব্যবহার করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের দাবি, ভারতে পলাতক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের হুমকি—“আমরা শান্তিতে থাকতে না পারলে কাউকে শান্তিতে থাকতে দেব না”—এই ঘটনার পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র থাকাকালে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে মুফতি মুহিব্বুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। একইভাবে অবিভক্ত টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রজব আলীর সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক ছিল। এলাকাবাসীর ধারণা, এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই ইসকনকে সামনে রেখে একটি মহল রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
মুফতি মুহিব্বুল্লাহর অপহরণের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ২৪ অক্টোবর তৌহিদী জনতার ব্যানারে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে সরেজমিনে মুফতির বাসভবনে গেলে তার ছোট ছেলে সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে কারও সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, মুফতির বর্তমান আচরণ রহস্যজনক মনে হচ্ছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, কেউ তাকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. আইয়ুব আলী অভিযোগ করেন, মুফতি মুহিব্বুল্লাহকে ব্যবহার করে ইসকনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে একটি মহল।
মুফতির বড় ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, তার বাবা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ইমাম পরিষদের অনুদান ও চিকিৎসার জন্য যোগাযোগ রাখতেন, তবে এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।
ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এসএম মেহেদী হাসান জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং ইসকনকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করা হয়ে থাকতে পারে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে।