Connect with us

ক্যাম্পাস

দালালদের একটি চক্র ফ্যাসিস্টদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে -ইবি সহ-সমন্বয়ক সৌরভ

Published

on

ইবি প্রতিনিধি 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার সাবেক সহ-সমন্বয়ক ইয়াশীরুল কবীর সৌরভ বলেছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোসরদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেই দালালদের একটি চক্র তাদের বাচানোর চেষ্টা করছে।

রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার পর ইবি শিক্ষার্থীদের আয়োজিত জুলাই বিরোধী শক্তির আস্ফালনের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এমন বক্তব্য দেন তিনি। 

তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোসরদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেই দালালদের একটি চক্র তাদের বাচানোর চেষ্টা করছে। আমরা ধারণা করি তাদেরই কেউ কেউ হয়তো বিভিন্ন উস্কানি দিয়, মগজ ধোলাই দিয়ে জুলাইয়ের বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের দাড় করাচ্ছে। সেইসব কালপ্রিটদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে।

তিনি আরও বলেন, চব্বিশে দীর্ঘ ৩৬ দিন যুদ্ধ করে আমরা সতেরো বছরের স্বৈরাচারের শাসনের অবসান করেছি। কিন্তু তার যে দোসররা যারা সেই স্বৈরাচারকে স্বৈরাচার হতে সাহায্য করেছে, স্বৈরাচারের দুর্নীতিকে মৌন ও লিখিতভাবে সম্মতি দিয়েছ, সেই দালালরা এখনও আমাদের চারিপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

তিনি জানান, জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ইবি থেকে প্রথম গ্রেফতার হওয়া আমাদের বন্ধু আল ফিকহ এন্ড ল বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভকে কিন্তু প্রথমে গুম করে রাখা হয়েছিল। আমরা তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছিলাম এবং তার সন্ধানের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো প্রকার সহযোগিতা করেনি। পরবর্তীতে যখন আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছি যে তাকে যদি ফেরত দেয়া না হয় তাহলে আমরা শৈলকূপা থানা ঘেরাও করবো। তখন আমাদের সেই বন্ধুকে ফেরত দেয়া হয়। সেই সময় থেকেই আমরা দেখতে পাই কিভাবে আমাদের সহযোদ্ধাদের জিম্মি করে, তাদের পরিবারকে জিম্মি করে, বিভিন্ন হুমকিধামকি দিয়ে, কিভাবে একটি নাটক সাজিয়েছিল আন্দোলন প্রত্যাহার করার জন্য।  সেই ফ্যাসিস্টদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়। 

এসময় এসময় শাখা ছাত্রদলের সদস্য নুর উদ্দীন বলেন, গতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কতিপয় শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয় এবং হাতে গোণা কয়েকজন ছাত্রের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ইবি শাখার সভাপতির নাম ছাড়া একটা প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর আমরা সকল ছাত্রসমাজ তার প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু তারপরও এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের টনক নড়েনি। আমরা গত কয়েকদিন আগে যখন দেখলাম যে তারা ৩০ তারিখে সিন্ডিকেটের কথা বললো, সেই সিন্ডিকেটে তারা আরাফাতকে বাদ দিয়ে তারা চুনোপুঁটিকে বহিষ্কার করলো। আমরা এই নাটককে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। 

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, চব্বিশের বর্ষা বিপ্লবের প্রায় দেড় বছর পর আমাদেরকে আবারও মাঠে নামতে হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসন আসার পরপরই চব্বিশে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল তার যেসব সহযোগীরা, যেসব দালালরা সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল, যারা শেখ হাসিনার সেই গণহত্যাকে বৈধতা দিয়েছিল লেখনির মাধ্যমে, টকশোর মাধ্যমে, তাদের সকলকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। অনেকদিন পর হলেও একটি তালিকা দেয়া হয়েছে যে কাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। কিন্তু এ তালিকা আমাদের আশা পূরণ করতে পারেনি। এ তালিকাটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত তালিকা। এর পর্যাপ্ততা নেই। কারণ শুধুমাত্র চার আগস্টেই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভটি সংঘটিত হয়েছিল, সেখানে প্রায়  শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষকরা ছিল। তাদের সবার নাম আসে নাই এবং তাদেরকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছির তাদেরও নাম আসেনাই। সেসময় ছাত্রলীগকে যারা শেল্টার দিতো তাদেরও নাম আসেনাই। এ তালিকায় রাঘববোয়ালদের বাইরে রেখে যারা তুলনামূলক কম দোষী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। আপনারা আগামী একসপ্তাহের মধ্যে এ তালিকা পূর্নাঙ্গ করবেন এবং যার যে দোষ তাকে সে শাস্তি দিবেন। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সাবেক সহ-সমন্বয়ক ইয়াশীরুল কবীর সৌরভ, গোলাম রব্বানী, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দীন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় জুলাই বিরোধী ভূমিকা থাকায় ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত ও ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু তালিকায় বাদ যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি, ট্রেজারার, প্রক্টরসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের শেল্টারদানকারী বিভিন্ন প্রভাবশালী শিক্ষকের নাম। এছাড়াও তালিকায় নেই ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের নাম। তারই প্রতিবাদে আয়োজিত হয় এ বিক্ষোভ মিছিল। আবার তালিকায় থাকা ১৯ জন শিক্ষকের মধ্যে কিছুসংখ্যক পক্ষে পূথক আন্দোলন করেছে তিনটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *